প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা
রাজধানীর বেশির ভাগ থানায় দুর্বৃত্তদের হামলার চিহ্ন
ছাত্র-জনতার চূড়ান্ত আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারতে পৌঁছে দেন। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। এই খবর ছড়িয়ে পরলে ছাত্ররা উল্লাস শুরু করে। বাঁধভাঙা এ উল্লাস যখন থানাগুলোর সামনে যায় তখনি ভয়ে কাঁপতে থাকে পুলিশ সদস্যরা। এসময় ছাত্রদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে অবস্থা হয়ে ওঠে বেগতিক। সোমবার দিনব্যাপী চলা এই হামলার ক্ষতচিহ্ন মঙ্গলবার ভেসে ওঠে দিনের আলোয়।সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেল ৩টার পর থেকে শুরু হয় এসব হামলা। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পুলিশ সদর দপ্তর থেকে শুরু করে প্রায়ই প্রতিটি থানাই হামলা হয়েছে।
এ সময় জীবন বাঁচাতে থানায় অবস্থানরত পুলিশরা যখন অসহায়, তখন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা কেউ তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেননি বা কোনো প্রকার নির্দেশ দেননি। এমন অবস্থায় রাজধানীর ৫১টি থানার ৪টি বাদে সব থানাই কম-বেশি আক্রান্ত হয়েছে।
আক্রান্ত হওয়ার পর কোনো থানাতেই নিরাপত্তা দিতে পারেনি পুলিশ। অধিকাংশ পুলিশ কর্মকর্তার মোবাইল খোলা পাওয়া গেলেও কেউ ফোন রিসিভ করেননি।
সোমবার রাতে ঢাকার গুলিস্তানে পুলিশ সদর দপ্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ভবনে হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় দুটি ভবনে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। এর আগেই পুলিশ সদরদপ্তরে দায়িত্বপ্রাপ্ত ও অবস্থান নেওয়া সদস্যদের অনেকে দেয়াল টপকে, কেউ পোশাক পরিবর্তন করে পালিয়ে যান।
খবর পাওয়া যায় মতিঝিল, বংশাল, পল্টন, খিলগাঁও, আদাবর, মোহাম্মদপুর, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, চাঁনখারপুল, সাভার থানায় দুর্বৃত্তদের হামলায় পুলিশের অন্তত অর্ধশত সদস্য নিহত হয়েছেন। এ সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে দাবি করে সূত্রগুলো।
এদিকে, গতকাল রাতে রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে ১৫ জনের মরদেহ আনা হয়েছে। হাসপাতালটিতে ২৬৫ জন আহত আন্দোলনকারী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হতাহতের বিষয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার সাজ্জাদ হোসেন জানান, সোমবার দুপুর থেকে হাসপাতালটিতে নিহত ও আহতদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। রাত পর্যন্ত হাসপাতালটিতে ১৫ জনের মরদেহ আনা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের বয়স ২০ থেকে ৩৫-এর মধ্যে। এ ছাড়া আহতদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।