০৪:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘আপা আপা’ বলা কে এই তানভীর

Spread the love

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টেলিফোনে কথোপকথনের একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তানভীর নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে ফোনালাপে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি দেশের খুব কাছাকাছি আছি। যাতে আমি চট করে ঢুকে পড়তে পারি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তানভীর কায়সার ২০১৯ সালের ৪ জুন লস আঞ্জেলস দিয়ে আমেরিকায় ঢোকেন। তিনি ওই সময় ভ্রমণ ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পর দাবি করেন যে, বাংলাদেশে আওয়ামী সরকার তাকে নির্যাতন করেছে। এ জন্য ২০২০ সালের ৭ মে দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন। তবে ২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারিতেই তার পাসপোর্টের ভ্যালিডিটি শেষ হয়ে গেছে।

শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁস হওয়া তানভীরের জন্ম ৭ ডিসেম্বর ১৯৮৯। তানভীরের বাবা সোলেমান কায়সার এবং মা নিলুফার ইয়াসমিন। তার স্ত্রীর নাম রুকাইয়া আযাদ।

গত ২৯ আগস্ট খবর প্রকাশ হয়, ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে এবার গাজিয়াবাদ থেকে সরিয়ে নিয়েছে ভারত। তাকে গভীর রাতে হেলিকপ্টারে দিল্লির কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়। তবে স্থানটি কোথায়, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

হেলিকপ্টারে গাজিয়াবাদ থেকে দিল্লি স্থানান্তরের খবর আর শেখ হাসিনার সঙ্গে তানভীরের টেলিফোনে যোগাযোগ হয় আগস্ট মাসের শেষের দিকে বা সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে।

তানভীর শেখ হাসিনাকে প্রশ্ন করেন, আপা বাংলাদেশে একটা নিউজ আসছে, আপনাকে গাজিয়াবাদ থেকে দিল্লিতে ট্রান্সফার করছে হেলিকপ্টারে করে।

হাসিনা অবাক হয়ে প্রশ্ন করেন, হেলিকপ্টার দিয়ে? কোন দেশের হেলিকপ্টার। ছবি পাঠাইও দেখবোনে। কি একটা আজগুবি কথা বলে ওরা। আমি দেশের খুব কাছাকাছি আছি। অতদূরে নাই। আমি খুব কাছাকাছিই আছি, যাতে আমি চট করে ঢুকে পড়তে পারি।

এ সময় কাঁদতে কাঁদতে তানভীর বলেন, আপা কষ্ট লাগে, আপনি যে মিডিয়াদের দিয়ে আসছেন, এরা সত্য বলে না, এরা কাজ করে না আপা। কই যাবো আপা। আল্লাহ আপনারে বাঁচাই রাখুক। আমরা আছি আপা। আপনি যখন নির্দেশ দেবেন, তানভীর তুমি আমেরিকা থেকে দেশে চলে আসো, এসে কামরাঙ্গীর চর-কেরাণীগঞ্জে দলীয় নেতৃত্ব গোছাও, আপনি বললে সাথে সাথে দৌঁড় দেব আপা।

শেখ হাসিনা বলেন, এখন গেলেই দেবে একখানা মামলা, শেষে কিছুই করতে পারবা না। আমার বিরুদ্ধে ১১৩টা মামলা। এইসব জিনিসগুলো নিয়ে জাতিসংঘ থেকে সবার কাছে বলা দরকার, ফলস মামলা দিচ্ছে। আমার পরিবারের কেউ বাকি নাই্। সবার নামে মামলা।

এরপরে শেখ হাসিনাকে আবার বলতে শোনা যায়, তুমি যেখানে আছো সেখানে তো ইলেকশন চলছে। তাদের ক্যাম্পেইনিংয়ের সময় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা, ক্যাম্পেইনিংয়ে সহযোগিতা করার সাথে সাথে এই বিষয়গুলো জানিয়ে রাখা। এদের কাছ থেকে একটা সাপোর্ট নিয়ে আসা।

তানভীর বলেন, আমার মনে হয় এবার ট্রাম্প আসবে। ট্রাম্প আসলে আমাদের জন্য খুবই ভালো আপা।

এর জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, সে যেই আসুক। তাদের ক্যাম্পেইনিংয়ে থাকলে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হলে ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। এটা আমি সবাইকে বলেও দিয়েছি।

এরপর শেখ হাসিনা বলেন, যারা প্রেসে চাকরি করে সবার নামে মামলা। যারা হিউম্যান রাইটসের কথা বলতো, যারা অপজিশনকে স্পেস দেওয়ার কথা বলতো তারা তো নেই। এই কথাগুলো তো তাদের সামনে তুলতে হবে। আমরা থাকতে দেশের যে অবস্থা ছিল, এখন তো দেশের অবস্থা খারাপ। মানুষ আবার সেই দরিদ্রসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। মানুষের খাবার নাই।

তানভীর : মিডিয়া কতটুকু অন্ধকার আপা দেখেন। আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছে রূপপুর পারমানবিক কেন্দ্রের। রাশিয়া সরাসরি বলছে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। ওইটা ওরা প্রচার করে না আপা।

শেখ হাসিনা বলেন, না করলো তাতে কিচ্ছু আসে যায় না। শোনো মানুষ যদি গাধা হয় আমার কিছু বলার নাই। ১৩ বিলিয়ন ডলার থেকে যদি আমি ৫শ ডলারই নিয়ে নেই তাহলে কীভাবে…মানুষ এত বোকা যদি হয় আমার কিছু বলার নেই। টিউলিপকে জড়িয়েছে, সে তখন বাচ্চা একটা মেয়ে, এমপিও না কিছু না। আমাদের দাওয়াত দিছে, গেছি। ও এত শক্তিশালী যে ১৭ বছরের একটা মেয়ে যে পুতিনের সাথে আমারে নেগোসিয়েশন করাইয়া দিছে। সিঙ্গাপুরে ব্যাংকে গিয়ে খোঁজ নিক। কোকোর টাকা আনছি তো ব্যাক করে। সেটা তোমাদের লেখা উচিত যে কারা মানি লন্ডারিং করে।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

লেখক তথ্য সম্পর্কে
আপডেটের সময় : ০৫:৩৭:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৫ টাইম ভিউ

‘আপা আপা’ বলা কে এই তানভীর

আপডেটের সময় : ০৫:৩৭:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Spread the love

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টেলিফোনে কথোপকথনের একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তানভীর নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে ফোনালাপে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি দেশের খুব কাছাকাছি আছি। যাতে আমি চট করে ঢুকে পড়তে পারি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তানভীর কায়সার ২০১৯ সালের ৪ জুন লস আঞ্জেলস দিয়ে আমেরিকায় ঢোকেন। তিনি ওই সময় ভ্রমণ ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পর দাবি করেন যে, বাংলাদেশে আওয়ামী সরকার তাকে নির্যাতন করেছে। এ জন্য ২০২০ সালের ৭ মে দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন। তবে ২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারিতেই তার পাসপোর্টের ভ্যালিডিটি শেষ হয়ে গেছে।

শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁস হওয়া তানভীরের জন্ম ৭ ডিসেম্বর ১৯৮৯। তানভীরের বাবা সোলেমান কায়সার এবং মা নিলুফার ইয়াসমিন। তার স্ত্রীর নাম রুকাইয়া আযাদ।

গত ২৯ আগস্ট খবর প্রকাশ হয়, ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে এবার গাজিয়াবাদ থেকে সরিয়ে নিয়েছে ভারত। তাকে গভীর রাতে হেলিকপ্টারে দিল্লির কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়। তবে স্থানটি কোথায়, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

হেলিকপ্টারে গাজিয়াবাদ থেকে দিল্লি স্থানান্তরের খবর আর শেখ হাসিনার সঙ্গে তানভীরের টেলিফোনে যোগাযোগ হয় আগস্ট মাসের শেষের দিকে বা সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে।

তানভীর শেখ হাসিনাকে প্রশ্ন করেন, আপা বাংলাদেশে একটা নিউজ আসছে, আপনাকে গাজিয়াবাদ থেকে দিল্লিতে ট্রান্সফার করছে হেলিকপ্টারে করে।

হাসিনা অবাক হয়ে প্রশ্ন করেন, হেলিকপ্টার দিয়ে? কোন দেশের হেলিকপ্টার। ছবি পাঠাইও দেখবোনে। কি একটা আজগুবি কথা বলে ওরা। আমি দেশের খুব কাছাকাছি আছি। অতদূরে নাই। আমি খুব কাছাকাছিই আছি, যাতে আমি চট করে ঢুকে পড়তে পারি।

এ সময় কাঁদতে কাঁদতে তানভীর বলেন, আপা কষ্ট লাগে, আপনি যে মিডিয়াদের দিয়ে আসছেন, এরা সত্য বলে না, এরা কাজ করে না আপা। কই যাবো আপা। আল্লাহ আপনারে বাঁচাই রাখুক। আমরা আছি আপা। আপনি যখন নির্দেশ দেবেন, তানভীর তুমি আমেরিকা থেকে দেশে চলে আসো, এসে কামরাঙ্গীর চর-কেরাণীগঞ্জে দলীয় নেতৃত্ব গোছাও, আপনি বললে সাথে সাথে দৌঁড় দেব আপা।

শেখ হাসিনা বলেন, এখন গেলেই দেবে একখানা মামলা, শেষে কিছুই করতে পারবা না। আমার বিরুদ্ধে ১১৩টা মামলা। এইসব জিনিসগুলো নিয়ে জাতিসংঘ থেকে সবার কাছে বলা দরকার, ফলস মামলা দিচ্ছে। আমার পরিবারের কেউ বাকি নাই্। সবার নামে মামলা।

এরপরে শেখ হাসিনাকে আবার বলতে শোনা যায়, তুমি যেখানে আছো সেখানে তো ইলেকশন চলছে। তাদের ক্যাম্পেইনিংয়ের সময় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা, ক্যাম্পেইনিংয়ে সহযোগিতা করার সাথে সাথে এই বিষয়গুলো জানিয়ে রাখা। এদের কাছ থেকে একটা সাপোর্ট নিয়ে আসা।

তানভীর বলেন, আমার মনে হয় এবার ট্রাম্প আসবে। ট্রাম্প আসলে আমাদের জন্য খুবই ভালো আপা।

এর জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, সে যেই আসুক। তাদের ক্যাম্পেইনিংয়ে থাকলে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হলে ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। এটা আমি সবাইকে বলেও দিয়েছি।

এরপর শেখ হাসিনা বলেন, যারা প্রেসে চাকরি করে সবার নামে মামলা। যারা হিউম্যান রাইটসের কথা বলতো, যারা অপজিশনকে স্পেস দেওয়ার কথা বলতো তারা তো নেই। এই কথাগুলো তো তাদের সামনে তুলতে হবে। আমরা থাকতে দেশের যে অবস্থা ছিল, এখন তো দেশের অবস্থা খারাপ। মানুষ আবার সেই দরিদ্রসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। মানুষের খাবার নাই।

তানভীর : মিডিয়া কতটুকু অন্ধকার আপা দেখেন। আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছে রূপপুর পারমানবিক কেন্দ্রের। রাশিয়া সরাসরি বলছে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। ওইটা ওরা প্রচার করে না আপা।

শেখ হাসিনা বলেন, না করলো তাতে কিচ্ছু আসে যায় না। শোনো মানুষ যদি গাধা হয় আমার কিছু বলার নাই। ১৩ বিলিয়ন ডলার থেকে যদি আমি ৫শ ডলারই নিয়ে নেই তাহলে কীভাবে…মানুষ এত বোকা যদি হয় আমার কিছু বলার নেই। টিউলিপকে জড়িয়েছে, সে তখন বাচ্চা একটা মেয়ে, এমপিও না কিছু না। আমাদের দাওয়াত দিছে, গেছি। ও এত শক্তিশালী যে ১৭ বছরের একটা মেয়ে যে পুতিনের সাথে আমারে নেগোসিয়েশন করাইয়া দিছে। সিঙ্গাপুরে ব্যাংকে গিয়ে খোঁজ নিক। কোকোর টাকা আনছি তো ব্যাক করে। সেটা তোমাদের লেখা উচিত যে কারা মানি লন্ডারিং করে।