০২:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাতারাতি গড়েতোলেন সম্পদেরপাহারআন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান সমন্বয়ক

Spread the love

রাতের বেলায় গাড়ি থেকে বস্তায় ঘুসের টাকা নামাতেন মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রধান সমন্বয়ক এম সানাউল হক। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান সমন্বয়ক হতে না হতেই নিজ নির্বাচনি এলাকা কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনের করিমগঞ্জ উপজেলা সদর বাজারের প্রধান সড়কে একটি বহুতল বাণিজ্যিক ভবন কিনে নেন। তিনি কদিন পরপর রাতে ওই ভবনে এসে উঠতেন এবং গাড়ি থেকে নামাতেন বস্তাভর্তি ঘুসের টাকা। আর এ কাজে তিনি সহযোগিতা নিতেন ওই ভবনের ভাড়াটিয়া এক ছাত্রলীগ নেতার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান সমন্বয়ক হওয়ায় যেন তিনি আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যান। তিনি যখনই রাতের বেলায় আসতেন তখনই তার সঙ্গে আসা একাধিক গাড়ি থেকে বস্তাভর্তি ঘুসের টাকা নামাতেন। এসব টাকা ওই ভবনের একটি বিশেষ কক্ষে রাখতেন। এ টাকার পরিমাণ কয়শ কোটি টাকা হবে তা বলা মুশকিল। তবে, এটুকু জানি যে, এসব টাকার একাংশ দিয়ে করিমগঞ্জ পৌর সদরের আয়লা এলাকায় একটি বিশাল ফিলিং স্টেশন ও গরুর ফার্ম গড়ে তোলেন তিনি। এছাড়া হাওড়ের বিভিন্ন এলাকায়ও কয়েক হাজার একর কৃষি জমি কিনেছেন বলেও জেনেছেন তিনি। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রমতে, রাজধানীতেও অঢেল সম্পদ গড়ে তুলেছেন তিনি। দেশের বাইরেও পাচার করেছেন শতকোটি টাকা।
অভিযোগ আছে, তিনি আর্থিক সুবিধা অর্থাৎ মোটা অঙ্কের ঘুস না পাওয়ার নিজ এলাকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ একাত্তর সালের সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীসহ দুই সহোদর স্কুলছাত্র ভাইকেও মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসিয়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করার চেষ্টা চালিয়েছেন। উপরন্তু বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ-সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রীকেও মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে তার কাছেও মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছিলেন বলে দাবি করেছেন প্রতিবেশী এম সানাউল হক।
নারায়ণগঞ্জের এসপি থাকাকালে ৬ কোটি টাকা চুক্তিতে তিনি পতিতালয় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে শত-শত অসহায় নারীকে বাস্তুচ্যুত করেছিলেন। উপরন্তু; সে সময় সুরজিত সরকার মানিক নামে তার এক প্রতিবেশী যুবককে নামমাত্র টাকা দিয়ে তার সব পৈতৃক সম্পত্তি জোরপূর্বক হাতিয়ে নেন। আর সেই হিন্দু সম্পত্তিতেই গড়ে তুলেছেন একটি বিলাসবহুল প্রমোদ ভবন।
৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা অবৈধভাবে গড়ে তোলা প্রমোদ ভবন এবং ফিলিং স্টেশন ও গরুর ফার্মে হামলা ও ভাঙচুরের তাণ্ডব চালায়।
রোববার বিকালে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলা সদরে মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান সমন্বয়ক এম সানাউল হকের বিচার ও ফাঁসির দাবিতে ঝাড়– ও জুতা ঝুলিয়ে গণবিক্ষোভ মিছিল করেন এলাকাবাসী। বাজারের বিএনপি দলীয় কার্যালয় থেকে এ জুতা ও ঝাড়ু মিছিল বের হয়ে করিমগঞ্জ প্রেস ক্লাব চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে এ কর্মসূচি শেষ হয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী সানাউল হকের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।
করিমগঞ্জে আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান সমন্বয়ক এম সানাউল হকের ফাঁসির দাবিতে গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে এম সানাউল হকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

লেখক তথ্য সম্পর্কে
আপডেটের সময় : ১০:৫৮:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৪
২২ টাইম ভিউ

রাতারাতি গড়েতোলেন সম্পদেরপাহারআন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান সমন্বয়ক

আপডেটের সময় : ১০:৫৮:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৪
Spread the love

রাতের বেলায় গাড়ি থেকে বস্তায় ঘুসের টাকা নামাতেন মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রধান সমন্বয়ক এম সানাউল হক। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান সমন্বয়ক হতে না হতেই নিজ নির্বাচনি এলাকা কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনের করিমগঞ্জ উপজেলা সদর বাজারের প্রধান সড়কে একটি বহুতল বাণিজ্যিক ভবন কিনে নেন। তিনি কদিন পরপর রাতে ওই ভবনে এসে উঠতেন এবং গাড়ি থেকে নামাতেন বস্তাভর্তি ঘুসের টাকা। আর এ কাজে তিনি সহযোগিতা নিতেন ওই ভবনের ভাড়াটিয়া এক ছাত্রলীগ নেতার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান সমন্বয়ক হওয়ায় যেন তিনি আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যান। তিনি যখনই রাতের বেলায় আসতেন তখনই তার সঙ্গে আসা একাধিক গাড়ি থেকে বস্তাভর্তি ঘুসের টাকা নামাতেন। এসব টাকা ওই ভবনের একটি বিশেষ কক্ষে রাখতেন। এ টাকার পরিমাণ কয়শ কোটি টাকা হবে তা বলা মুশকিল। তবে, এটুকু জানি যে, এসব টাকার একাংশ দিয়ে করিমগঞ্জ পৌর সদরের আয়লা এলাকায় একটি বিশাল ফিলিং স্টেশন ও গরুর ফার্ম গড়ে তোলেন তিনি। এছাড়া হাওড়ের বিভিন্ন এলাকায়ও কয়েক হাজার একর কৃষি জমি কিনেছেন বলেও জেনেছেন তিনি। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রমতে, রাজধানীতেও অঢেল সম্পদ গড়ে তুলেছেন তিনি। দেশের বাইরেও পাচার করেছেন শতকোটি টাকা।
অভিযোগ আছে, তিনি আর্থিক সুবিধা অর্থাৎ মোটা অঙ্কের ঘুস না পাওয়ার নিজ এলাকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ একাত্তর সালের সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীসহ দুই সহোদর স্কুলছাত্র ভাইকেও মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসিয়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করার চেষ্টা চালিয়েছেন। উপরন্তু বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ-সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রীকেও মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে তার কাছেও মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছিলেন বলে দাবি করেছেন প্রতিবেশী এম সানাউল হক।
নারায়ণগঞ্জের এসপি থাকাকালে ৬ কোটি টাকা চুক্তিতে তিনি পতিতালয় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে শত-শত অসহায় নারীকে বাস্তুচ্যুত করেছিলেন। উপরন্তু; সে সময় সুরজিত সরকার মানিক নামে তার এক প্রতিবেশী যুবককে নামমাত্র টাকা দিয়ে তার সব পৈতৃক সম্পত্তি জোরপূর্বক হাতিয়ে নেন। আর সেই হিন্দু সম্পত্তিতেই গড়ে তুলেছেন একটি বিলাসবহুল প্রমোদ ভবন।
৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা অবৈধভাবে গড়ে তোলা প্রমোদ ভবন এবং ফিলিং স্টেশন ও গরুর ফার্মে হামলা ও ভাঙচুরের তাণ্ডব চালায়।
রোববার বিকালে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলা সদরে মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান সমন্বয়ক এম সানাউল হকের বিচার ও ফাঁসির দাবিতে ঝাড়– ও জুতা ঝুলিয়ে গণবিক্ষোভ মিছিল করেন এলাকাবাসী। বাজারের বিএনপি দলীয় কার্যালয় থেকে এ জুতা ও ঝাড়ু মিছিল বের হয়ে করিমগঞ্জ প্রেস ক্লাব চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে এ কর্মসূচি শেষ হয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী সানাউল হকের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।
করিমগঞ্জে আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান সমন্বয়ক এম সানাউল হকের ফাঁসির দাবিতে গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে এম সানাউল হকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।