১১:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধে সরকারকে আইনি নোটিশ

Spread the love


ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতির প্রতিবাদে অন্তর্বর্তী সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান এ নোটিশ পাঠান।

নোটিশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আমদানি-রপ্তানির কার্যালয়ের প্রধান নিয়ন্ত্রককে বিবাদী করা হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়, ভারতের বিশাল ও বিস্তৃত সমুদ্রসীমা রয়েছে। ভারতের জলসীমায় ব্যাপকভাবে ইলিশ উৎপাদন হয়। এই বিবেচনায় বাংলাদেশ থেকে ভারতের ইলিশ মাছ আমদানির কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু ভারত মূলত বাংলাদেশের পদ্মা নদীর ইলিশ আমদানি করে থাকে।

‘বাংলাদেশে ভারতীয় এজেন্টরা ও মাছ রপ্তানিকারকরা সারা বছর ধরে পদ্মা নদীর ইলিশ মাছ মজুদ করে রাখে এবং বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে পদ্মা নদীর সব ইলিশ মাছ ভারতে রপ্তানি করে ও ক্ষেত্রবিশেষে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পাচার করে। বাংলাদেশের পদ্মা নদীর সব ইলিশ ভারতে রপ্তানি ও পাচার হওয়ার কারণে বাংলাদেশের জনগণ বাজারে গিয়ে পদ্মার নদীর ইলিশ পায় না। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের জনগণকে সামুদ্রিক ইলিশ খেতে হয়, যা পদ্মার ইলিশের মতো সুস্বাদু নয়।’

নোটিশে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের পদ্মা নদীতে যে সীমিত পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যায়, তা দেশের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী যথেষ্ট নয়। এ অবস্থায় যদি পদ্মার সব ইলিশ ভারতে চলে যায় তাহলে বাংলাদেশের জনগণ এই পদ্মার ইলিশ খেতে পারবে না। এভাবে বাংলাদেশের জনগণকে পদ্মার ইলিশ থেকে বঞ্চিত করে ভারতের জনগণকে পদ্মার ইলিশ খাওয়ানো সরকারের জন্য সমীচীন নয়। এ কথা সত্য যে, বাংলাদেশ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসপত্র ভারত থেকে আমদানি করে থাকে কিন্তু ভারত সরকার কখনোই তার নিজের দেশের জনগণের চাহিদা না মিটিয়ে বাংলাদেশে কোনো পণ্য রপ্তানি করে না।

‘বাংলাদেশের রপ্তানি নীতি ২০২১-২৪ অনুযায়ী ইলিশ মাছ মুক্তভাবে রপ্তানি যোগ্য কোনো মাছ নয়। এ অবস্থায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থবিরোধী কাজ করেছে।’

আইনি নোটিশে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুথানের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসে। দেশের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা এই সরকারের অন্যতম প্রধান কাজ। কিন্তু বাংলাদেশের আপামর জনগণকে বঞ্চিত করে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতিদানের মাধ্যমে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের জনগণের সঙ্গে বেইমানি করেছে।

এ অবস্থায় নোটিশ পাওয়ার তিনদিনের মধ্যে ভারতে ইলিশ রপ্তানির বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে বলা হয়।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

লেখক তথ্য সম্পর্কে
আপডেটের সময় : ০৭:২৬:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
২৪ টাইম ভিউ

ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধে সরকারকে আইনি নোটিশ

আপডেটের সময় : ০৭:২৬:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Spread the love


ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতির প্রতিবাদে অন্তর্বর্তী সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান এ নোটিশ পাঠান।

নোটিশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আমদানি-রপ্তানির কার্যালয়ের প্রধান নিয়ন্ত্রককে বিবাদী করা হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়, ভারতের বিশাল ও বিস্তৃত সমুদ্রসীমা রয়েছে। ভারতের জলসীমায় ব্যাপকভাবে ইলিশ উৎপাদন হয়। এই বিবেচনায় বাংলাদেশ থেকে ভারতের ইলিশ মাছ আমদানির কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু ভারত মূলত বাংলাদেশের পদ্মা নদীর ইলিশ আমদানি করে থাকে।

‘বাংলাদেশে ভারতীয় এজেন্টরা ও মাছ রপ্তানিকারকরা সারা বছর ধরে পদ্মা নদীর ইলিশ মাছ মজুদ করে রাখে এবং বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে পদ্মা নদীর সব ইলিশ মাছ ভারতে রপ্তানি করে ও ক্ষেত্রবিশেষে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পাচার করে। বাংলাদেশের পদ্মা নদীর সব ইলিশ ভারতে রপ্তানি ও পাচার হওয়ার কারণে বাংলাদেশের জনগণ বাজারে গিয়ে পদ্মার নদীর ইলিশ পায় না। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের জনগণকে সামুদ্রিক ইলিশ খেতে হয়, যা পদ্মার ইলিশের মতো সুস্বাদু নয়।’

নোটিশে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের পদ্মা নদীতে যে সীমিত পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যায়, তা দেশের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী যথেষ্ট নয়। এ অবস্থায় যদি পদ্মার সব ইলিশ ভারতে চলে যায় তাহলে বাংলাদেশের জনগণ এই পদ্মার ইলিশ খেতে পারবে না। এভাবে বাংলাদেশের জনগণকে পদ্মার ইলিশ থেকে বঞ্চিত করে ভারতের জনগণকে পদ্মার ইলিশ খাওয়ানো সরকারের জন্য সমীচীন নয়। এ কথা সত্য যে, বাংলাদেশ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসপত্র ভারত থেকে আমদানি করে থাকে কিন্তু ভারত সরকার কখনোই তার নিজের দেশের জনগণের চাহিদা না মিটিয়ে বাংলাদেশে কোনো পণ্য রপ্তানি করে না।

‘বাংলাদেশের রপ্তানি নীতি ২০২১-২৪ অনুযায়ী ইলিশ মাছ মুক্তভাবে রপ্তানি যোগ্য কোনো মাছ নয়। এ অবস্থায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থবিরোধী কাজ করেছে।’

আইনি নোটিশে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুথানের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসে। দেশের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা এই সরকারের অন্যতম প্রধান কাজ। কিন্তু বাংলাদেশের আপামর জনগণকে বঞ্চিত করে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতিদানের মাধ্যমে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের জনগণের সঙ্গে বেইমানি করেছে।

এ অবস্থায় নোটিশ পাওয়ার তিনদিনের মধ্যে ভারতে ইলিশ রপ্তানির বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে বলা হয়।